Hi

ঢাকা, বাংলাদেশ ০৬:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জয় নিয়েই মাঠ ছাড়লো বার্সেলোনা

সমীকরণ ছিল সহজ। বার্সেলোনা জিতলে তারা লা লিগা পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে যাবে ৭ পয়েন্টে। বাকি ৩ ম্যাচ থেকে কেবল এক জয় পেলেই শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাবে। আর রিয়াল জিতলে জমে যাবে নাটকীয়তা। মৌসুমের শেষ ক্লাসিকো তাই শুরু থেকে সাজিয়ে রেখেছিল দারুণ উন্মাদনা। 

সেটার শেষ চলল একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। ম্যাচে গোল হয়েছে মোট ৭টি। গোল বাতিল হয়েছে ৪টি। ছিল পেনাল্টি বাতিলের ঘটনা। ১৯২১ সালের পর প্রথমবার এল ক্লাসিকোতে প্রথমার্ধে দেখা গেল ৫ গোল। সব নাটকীয়তা শেষে জয় হলো বার্সেলোনারই। 

ঘরের মাঠে রিয়ালকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে লা লিগায় ৭ পয়েন্টের লিড নিশ্চিত করেছে হ্যান্সি ফ্লিকের দল। রিয়াল পরের ম্যাচে পয়েন্ট হারালে কিংবা বার্সেলোনা তাদের পরের ম্যাচ জিতলেই শিরোপা উৎসব করতে পারবেন ইয়ামাল-রাফিনিয়ারা। 

ম্যাচ হারলেও এদিনের শুরুটা ছিল একেবারেই রিয়াল মাদ্রিদের। ঘরের মাঠে বার্সেলোনাকে যতটা জোর ধাক্কা দেয়া সম্ভব ছিল, সেটাই দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। শুরু থেকেই আক্রমণে মনোযোগ ছিল বার্সেলোনার। সেটার সুযোগে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় রিয়াল। তবে পাউ কুবারাসি রিয়াল তারকা এমবাপেকে মার্ক করতে ভুল করেছিলেন। বাধ্য হয়ে ট্যাকেল করতে চেয়েছিলেন বার্সা গোলরক্ষক শেজনি। সেখানেও করেছিলেন ভুল। রিয়াল পায় পেনাল্টি। এম্বাপের স্পটকিকে ম্যাচের ৫ মিনিটেই লিড পায় লস ব্লাঙ্কোসরা।

ম্যাচের ১৪ মিনিটেই লিড হলো দ্বিগুণ। এবারেও গোলদাতা সেই এমবাপে। কাউন্টার অ্যাটাকে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের দারুণ এক পাস খুজে নেয় এমবাপেকে। ওয়ান-টু-ওয়ানে শেজনিকে সুযোগই দেননি রিয়াল নাম্বার নাইন। 

রিয়ালের গল্পটা ওটুকুই ছিল প্রথমার্ধে। ১৮ মিনিটে বার্সেলোনা পেয়ে যায় নিজেদের প্রথম গোল। কর্নার থেকে ফেরান তোরেসের হেড পাস থেকে একেবারেই সহজ ফিনিশ করেন এরিক গার্সিয়া। বার্সেলোনার ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ পুরোদমে চলে আসে এই গোলের পরেই। যদিও ম্যাচের স্কোরলাইনে সমতা আনতে সময় লেগেছে ৩২ মিনিট পর্যন্ত।

ডি-বক্সের ভেতর বার্সার সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার সময় কিছুটা দূরেই ছিলেন লামিনে ইয়ামাল। ফেরান তোরেস পাস বাড়ান সেদিকেই। বাকানো শটে দুর্দান্ত এক গোল করেন ১৭ বছরের ইয়ামাল। এরপরেই লুইস অলিম্পিক স্টেডিয়ামের ভরা গ্যালারির সামনে করলেন বিখ্যাত কালমা সেলিব্রেশন।

বার্সেলোনার পরের দুই গোল মূলত রিয়ালের উপহার দেয়। দ্বিতীয় গোলের পর কিকঅফ করতেই  দুই রিয়াল সতীর্থ এমবাপে ও দানি সেবায়োস বলের দখল নিতে গিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। দুজনের ভুলে বল নিয়ে মাপা পাস বাড়ান পেদ্রি। রাফিনিয়া বল পাঠালেন দূরের পোস্টে। বার্সেলোনার কামব্যাক শেষ লিড নেয় ৩-২ গোলে। 

খেলার ধারার বিপরীতে ৪৩ মিনিটে রিয়ালের পেনাল্টি আবেদনে রেফারি সায় দিয়েছিলেন। তবে বিল্ডআপের সময়েই ছিল অফসাইড। পেনাল্টি বাতিল হয় সেখানেই। এর দুই মিনিট পর ফের রিয়াল রক্ষণের ভুল। এবারে লুকাস ভাস্কেজের ভুলে বল রাফিনিয়া। তিনি পাস দেন ফেরান তোরেসকে। তবে তোরেস নিঃস্বার্থ পাস বাড়ালে ব্যবধান ৪-২ করেন রাফিনিয়া৷ 

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে এমবাপে এবং দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল পেয়েছিলেন লামিন ইয়ামাল। তবে দুই গোলই কাটা পড়ে অফসাইডের কারণে।

রিয়াল অবশ্য গোল পেয়েছে ম্যাচের ৭০ মিনিটে এসে। লুকা মদ্রিচ নেমেছিলেন দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে। তারই চতুর এক পাস খুঁজে নেয় ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে। ভিনিসিয়ুসের সামনে সুযোগ ছিল গোল করার। তবে ঝুকি না নিয়ে এমবাপেকে দিয়েছেন পাস। এমবাপে সহজ ফিনিশে পেলেন হ্যাটট্রিকের দেখা। স্কোরলাইন হলো ৪-৩৷ 

বার্সেলোনার রাফিনিয়া এরপরেই মিস করেন ম্যাচের সেরা সু্যোগটা। ইয়ামালের পাস থেকে গোললাইনের একেবারে সামনে থেকে বল আকাশে পাঠিয়েছেন এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। 

ম্যাচের সবচে আলোচিত মুহূর্ত আসে ৮৩ মিনিটে। রিয়াল ডিবক্সে ফেরান তোরেসের শট বাধা পায় অরেলিন চুয়ামেনির হাতে লেগে। বার্সেলোনার পেনাল্টি আবেদন নিয়ে পরীক্ষা চলেছে বেশ অনেকটা সময়। ভিএআর পরীক্ষায় দেখা যায় বল হাতে লেগেছে ঠিকই। তবে সেটা ছিল চুয়ামেনির বডিলাইনের পেছনে। 

৮৮ মিনিটেই রিয়ালের সিনিয়র দলে অভিষেক হয় ভিক্টর মুনোজের। নিজেত প্রথম স্পর্শেই পেতে পারতেন গোল। কিন্তু সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেছেন এই তরুণ। যোগ করা সময়ে কিলিয়ান এমবাপে কর্নার থেকে পাওয়া বলে গোল করেছেন। সেটাও অবশ্য বাতিল হয়েছে অফসাইডে। 

যোগ করা সময়ের ৫ম মিনিটে অবশ্য একক প্রচেষ্টায় গোল করে বসেন বার্সা তরুণ ফার্মিন লোপেজ। এবারেও অবশ্য বাদ সেধেছে হ্যান্ডবল। গোল বাতিল হয় বার্সার। তবে তাতে জয় আটকেনি। ৪-৩ গোলে জয়ের পাশাপাশি বার্সা অনেকটাই নিশ্চিত করেছে লা লিগার শিরোপাও।

মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ই-মেইল সহ সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি সংরক্ষণ করা হবে।

About Author Information

© সর্বস্বত স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © Jonogoner Khobor - জনগণের খবর
                                  কারিগরি সহযোগিতায়ঃ মো. সাইফুল ইসলাম                                  

জয় নিয়েই মাঠ ছাড়লো বার্সেলোনা

আপডেট : ০৪:৪৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

সমীকরণ ছিল সহজ। বার্সেলোনা জিতলে তারা লা লিগা পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে যাবে ৭ পয়েন্টে। বাকি ৩ ম্যাচ থেকে কেবল এক জয় পেলেই শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাবে। আর রিয়াল জিতলে জমে যাবে নাটকীয়তা। মৌসুমের শেষ ক্লাসিকো তাই শুরু থেকে সাজিয়ে রেখেছিল দারুণ উন্মাদনা। 

সেটার শেষ চলল একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। ম্যাচে গোল হয়েছে মোট ৭টি। গোল বাতিল হয়েছে ৪টি। ছিল পেনাল্টি বাতিলের ঘটনা। ১৯২১ সালের পর প্রথমবার এল ক্লাসিকোতে প্রথমার্ধে দেখা গেল ৫ গোল। সব নাটকীয়তা শেষে জয় হলো বার্সেলোনারই। 

ঘরের মাঠে রিয়ালকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে লা লিগায় ৭ পয়েন্টের লিড নিশ্চিত করেছে হ্যান্সি ফ্লিকের দল। রিয়াল পরের ম্যাচে পয়েন্ট হারালে কিংবা বার্সেলোনা তাদের পরের ম্যাচ জিতলেই শিরোপা উৎসব করতে পারবেন ইয়ামাল-রাফিনিয়ারা। 

ম্যাচ হারলেও এদিনের শুরুটা ছিল একেবারেই রিয়াল মাদ্রিদের। ঘরের মাঠে বার্সেলোনাকে যতটা জোর ধাক্কা দেয়া সম্ভব ছিল, সেটাই দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। শুরু থেকেই আক্রমণে মনোযোগ ছিল বার্সেলোনার। সেটার সুযোগে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় রিয়াল। তবে পাউ কুবারাসি রিয়াল তারকা এমবাপেকে মার্ক করতে ভুল করেছিলেন। বাধ্য হয়ে ট্যাকেল করতে চেয়েছিলেন বার্সা গোলরক্ষক শেজনি। সেখানেও করেছিলেন ভুল। রিয়াল পায় পেনাল্টি। এম্বাপের স্পটকিকে ম্যাচের ৫ মিনিটেই লিড পায় লস ব্লাঙ্কোসরা।

ম্যাচের ১৪ মিনিটেই লিড হলো দ্বিগুণ। এবারেও গোলদাতা সেই এমবাপে। কাউন্টার অ্যাটাকে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের দারুণ এক পাস খুজে নেয় এমবাপেকে। ওয়ান-টু-ওয়ানে শেজনিকে সুযোগই দেননি রিয়াল নাম্বার নাইন। 

রিয়ালের গল্পটা ওটুকুই ছিল প্রথমার্ধে। ১৮ মিনিটে বার্সেলোনা পেয়ে যায় নিজেদের প্রথম গোল। কর্নার থেকে ফেরান তোরেসের হেড পাস থেকে একেবারেই সহজ ফিনিশ করেন এরিক গার্সিয়া। বার্সেলোনার ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ পুরোদমে চলে আসে এই গোলের পরেই। যদিও ম্যাচের স্কোরলাইনে সমতা আনতে সময় লেগেছে ৩২ মিনিট পর্যন্ত।

ডি-বক্সের ভেতর বার্সার সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার সময় কিছুটা দূরেই ছিলেন লামিনে ইয়ামাল। ফেরান তোরেস পাস বাড়ান সেদিকেই। বাকানো শটে দুর্দান্ত এক গোল করেন ১৭ বছরের ইয়ামাল। এরপরেই লুইস অলিম্পিক স্টেডিয়ামের ভরা গ্যালারির সামনে করলেন বিখ্যাত কালমা সেলিব্রেশন।

বার্সেলোনার পরের দুই গোল মূলত রিয়ালের উপহার দেয়। দ্বিতীয় গোলের পর কিকঅফ করতেই  দুই রিয়াল সতীর্থ এমবাপে ও দানি সেবায়োস বলের দখল নিতে গিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। দুজনের ভুলে বল নিয়ে মাপা পাস বাড়ান পেদ্রি। রাফিনিয়া বল পাঠালেন দূরের পোস্টে। বার্সেলোনার কামব্যাক শেষ লিড নেয় ৩-২ গোলে। 

খেলার ধারার বিপরীতে ৪৩ মিনিটে রিয়ালের পেনাল্টি আবেদনে রেফারি সায় দিয়েছিলেন। তবে বিল্ডআপের সময়েই ছিল অফসাইড। পেনাল্টি বাতিল হয় সেখানেই। এর দুই মিনিট পর ফের রিয়াল রক্ষণের ভুল। এবারে লুকাস ভাস্কেজের ভুলে বল রাফিনিয়া। তিনি পাস দেন ফেরান তোরেসকে। তবে তোরেস নিঃস্বার্থ পাস বাড়ালে ব্যবধান ৪-২ করেন রাফিনিয়া৷ 

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে এমবাপে এবং দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল পেয়েছিলেন লামিন ইয়ামাল। তবে দুই গোলই কাটা পড়ে অফসাইডের কারণে।

রিয়াল অবশ্য গোল পেয়েছে ম্যাচের ৭০ মিনিটে এসে। লুকা মদ্রিচ নেমেছিলেন দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে। তারই চতুর এক পাস খুঁজে নেয় ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে। ভিনিসিয়ুসের সামনে সুযোগ ছিল গোল করার। তবে ঝুকি না নিয়ে এমবাপেকে দিয়েছেন পাস। এমবাপে সহজ ফিনিশে পেলেন হ্যাটট্রিকের দেখা। স্কোরলাইন হলো ৪-৩৷ 

বার্সেলোনার রাফিনিয়া এরপরেই মিস করেন ম্যাচের সেরা সু্যোগটা। ইয়ামালের পাস থেকে গোললাইনের একেবারে সামনে থেকে বল আকাশে পাঠিয়েছেন এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। 

ম্যাচের সবচে আলোচিত মুহূর্ত আসে ৮৩ মিনিটে। রিয়াল ডিবক্সে ফেরান তোরেসের শট বাধা পায় অরেলিন চুয়ামেনির হাতে লেগে। বার্সেলোনার পেনাল্টি আবেদন নিয়ে পরীক্ষা চলেছে বেশ অনেকটা সময়। ভিএআর পরীক্ষায় দেখা যায় বল হাতে লেগেছে ঠিকই। তবে সেটা ছিল চুয়ামেনির বডিলাইনের পেছনে। 

৮৮ মিনিটেই রিয়ালের সিনিয়র দলে অভিষেক হয় ভিক্টর মুনোজের। নিজেত প্রথম স্পর্শেই পেতে পারতেন গোল। কিন্তু সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেছেন এই তরুণ। যোগ করা সময়ে কিলিয়ান এমবাপে কর্নার থেকে পাওয়া বলে গোল করেছেন। সেটাও অবশ্য বাতিল হয়েছে অফসাইডে। 

যোগ করা সময়ের ৫ম মিনিটে অবশ্য একক প্রচেষ্টায় গোল করে বসেন বার্সা তরুণ ফার্মিন লোপেজ। এবারেও অবশ্য বাদ সেধেছে হ্যান্ডবল। গোল বাতিল হয় বার্সার। তবে তাতে জয় আটকেনি। ৪-৩ গোলে জয়ের পাশাপাশি বার্সা অনেকটাই নিশ্চিত করেছে লা লিগার শিরোপাও।