Hi

ঢাকা, বাংলাদেশ ০৪:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সকাল-সন্ধ্যায় যে দোয়া পড়বেন

  • ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট : ০২:৪৪:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭২ দেখা

 

বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি, দুশ্চিন্তা কিংবা কোনোকিছু চেয়ে বরাবরই মুমিনরা মহান রবের কাছে দুহাত তুলে ধরেন। আল্লাহ তাআলাও নিজে ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু। যখন কোনো বান্দা তার নিকট দুই হাত তুলে প্রার্থনা করে, তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে শূন্যহাতে ফিরিয়ে দেন না।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘প্রার্থনাকারী যখন আমাকে ডাকে, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিই। সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় ও ঈমান আনয়ন করে। আশা করা যায়, তারা সফলকাম হবে।’ (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬)।

হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি দিনের (সকাল) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ ইস্তিগফার পড়বে আর সন্ধ্যা হওয়ার আগেই যদি সে মারা যায়, সে জান্নাতি হবে। আর যে ব্যক্তি রাতের (প্রথম) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ দোয়া পড়ে নেবে, সে যদি ভোর হওয়ার আগেই মারা যায় তবে সে জান্নাতি হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৮৬৭)

রাসুল (সা.) সকাল-সন্ধ্যায় মহান রবের কাছে কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা শিখিয়েছেন।

উছমান ইবনু আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন- প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় যে বান্দা তিনবার নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করবে, কোনোকিছুই তার অনিষ্ট করতে পারবে না। দোয়াটি হলো- بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মায়াসমিহি সাইইন, ফিল-আরদি ওলা ফিস-সামায়ি, ওহুয়াস-সামিয়ুন আলিম।

অর্থ: আল্লাহর নাম নিচ্ছি। জমিন ও আসমানের কোনোকিছুই যাঁর নামে বরকতের ক্ষতি সাধন করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। (ইবনু মাজাহ, হাদিস: ৩৮৬৯; তিরমিজি, হাদিস: ৩৩৮৮)

ছাওবান (রা:) থেকে বর্ণিত অপর একটি হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, কেউ যদি সন্ধ্যায় নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করে, তবে আল্লাহর ওপর হক হয়ে যায় সেই ব্যক্তিকে সন্তুষ্টি করা। দোয়াটি হলো: رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا

উচ্চারণ: রাদিতু বিল্লাহি রাব্বা, ওবিল-ইসলামি দ্বিনা, ওয়া-বি-মুহাম্মাদিন নাবিইয়ান।

অর্থ: আমি রব হিসেবে আল্লাহ’র প্রতি, দ্বীন হিসেবে ইসলামের প্রতি, আর নবী হিসেবে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (স:)-এর প্রতি সন্তুষ্ট। (তিরমিজী, হাদিস: ৩৩৮৯)

এ ক্ষেত্রে সকাল-সন্ধ্যায় কবরের আযাব ও বার্ধক্যের দৈন্যতা থেকেও আশ্রয় চেয়ে দোয়া করতে পারেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু’আ করতেন- اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَالْكَسَلِ وَأَرْذَلِ الْعُمُرِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ وَفِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল বুখলি, ওয়াল কাসালি, ওয়া-আরদালিল-উমুরি, ওয়া-আযাবিল-কাবরি, ওয়া-ফিতনাতিল-মাখইয়াল মাম্মাতি।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কৃপণতা, অলসতা, বয়সের নিকৃষ্টতম সময় (বার্ধক্যের দৈন্য), কবরের আযাব এবং জীবন ও মৃত্যুর দুর্যোগ থেকে আশ্রয় চাই। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৬২৯)

এছাড়াও সর্বাবস্থায় সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার পড়ার কথাও এসেছে বিভিন্ন হাদিসে। শাদ্দাদ ইবনু আউস (রা.) থেকে বর্ণিত- নবী করিম (স:) বলেছেন- সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার হলো বান্দার এ দোয়া পড়া- ‘হে আল্লাহ তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই গোলাম। আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নিয়ামত দিয়েছ, তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে মাফ করে দাও। কারণ, তুমি ছাড়া কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।

আরবিতে সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার: اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাকতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া-আনা আ’লা আহ্‌দিকা ওয়া-ওয়াদিকা মাসতাততু, আউযুবিকা মিন শার্‌রি মা ছানাতু, আবূউলাকা বিনিইমাতিকা আ’লাইয়্যা ওয়া আবূউলাকা বিযানবী ফাগ্‌ফির্‌লি ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্‌যুনূবা ইল্লা আনতা।

ট্যাগ :

মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ই-মেইল সহ সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি সংরক্ষণ করা হবে।

About Author Information

© সর্বস্বত স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © Jonogoner Khobor - জনগণের খবর
                                  কারিগরি সহযোগিতায়ঃ মো. সাইফুল ইসলাম                                  

সকাল-সন্ধ্যায় যে দোয়া পড়বেন

আপডেট : ০২:৪৪:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

 

বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি, দুশ্চিন্তা কিংবা কোনোকিছু চেয়ে বরাবরই মুমিনরা মহান রবের কাছে দুহাত তুলে ধরেন। আল্লাহ তাআলাও নিজে ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু। যখন কোনো বান্দা তার নিকট দুই হাত তুলে প্রার্থনা করে, তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে শূন্যহাতে ফিরিয়ে দেন না।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘প্রার্থনাকারী যখন আমাকে ডাকে, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিই। সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় ও ঈমান আনয়ন করে। আশা করা যায়, তারা সফলকাম হবে।’ (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬)।

হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি দিনের (সকাল) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ ইস্তিগফার পড়বে আর সন্ধ্যা হওয়ার আগেই যদি সে মারা যায়, সে জান্নাতি হবে। আর যে ব্যক্তি রাতের (প্রথম) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ দোয়া পড়ে নেবে, সে যদি ভোর হওয়ার আগেই মারা যায় তবে সে জান্নাতি হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৮৬৭)

রাসুল (সা.) সকাল-সন্ধ্যায় মহান রবের কাছে কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা শিখিয়েছেন।

উছমান ইবনু আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন- প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় যে বান্দা তিনবার নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করবে, কোনোকিছুই তার অনিষ্ট করতে পারবে না। দোয়াটি হলো- بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মায়াসমিহি সাইইন, ফিল-আরদি ওলা ফিস-সামায়ি, ওহুয়াস-সামিয়ুন আলিম।

অর্থ: আল্লাহর নাম নিচ্ছি। জমিন ও আসমানের কোনোকিছুই যাঁর নামে বরকতের ক্ষতি সাধন করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। (ইবনু মাজাহ, হাদিস: ৩৮৬৯; তিরমিজি, হাদিস: ৩৩৮৮)

ছাওবান (রা:) থেকে বর্ণিত অপর একটি হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, কেউ যদি সন্ধ্যায় নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করে, তবে আল্লাহর ওপর হক হয়ে যায় সেই ব্যক্তিকে সন্তুষ্টি করা। দোয়াটি হলো: رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا

উচ্চারণ: রাদিতু বিল্লাহি রাব্বা, ওবিল-ইসলামি দ্বিনা, ওয়া-বি-মুহাম্মাদিন নাবিইয়ান।

অর্থ: আমি রব হিসেবে আল্লাহ’র প্রতি, দ্বীন হিসেবে ইসলামের প্রতি, আর নবী হিসেবে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (স:)-এর প্রতি সন্তুষ্ট। (তিরমিজী, হাদিস: ৩৩৮৯)

এ ক্ষেত্রে সকাল-সন্ধ্যায় কবরের আযাব ও বার্ধক্যের দৈন্যতা থেকেও আশ্রয় চেয়ে দোয়া করতে পারেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু’আ করতেন- اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَالْكَسَلِ وَأَرْذَلِ الْعُمُرِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ وَفِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল বুখলি, ওয়াল কাসালি, ওয়া-আরদালিল-উমুরি, ওয়া-আযাবিল-কাবরি, ওয়া-ফিতনাতিল-মাখইয়াল মাম্মাতি।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কৃপণতা, অলসতা, বয়সের নিকৃষ্টতম সময় (বার্ধক্যের দৈন্য), কবরের আযাব এবং জীবন ও মৃত্যুর দুর্যোগ থেকে আশ্রয় চাই। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৬২৯)

এছাড়াও সর্বাবস্থায় সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার পড়ার কথাও এসেছে বিভিন্ন হাদিসে। শাদ্দাদ ইবনু আউস (রা.) থেকে বর্ণিত- নবী করিম (স:) বলেছেন- সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার হলো বান্দার এ দোয়া পড়া- ‘হে আল্লাহ তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই গোলাম। আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নিয়ামত দিয়েছ, তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে মাফ করে দাও। কারণ, তুমি ছাড়া কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।

আরবিতে সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার: اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাকতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া-আনা আ’লা আহ্‌দিকা ওয়া-ওয়াদিকা মাসতাততু, আউযুবিকা মিন শার্‌রি মা ছানাতু, আবূউলাকা বিনিইমাতিকা আ’লাইয়্যা ওয়া আবূউলাকা বিযানবী ফাগ্‌ফির্‌লি ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্‌যুনূবা ইল্লা আনতা।