ময়মনসিংহের গফরগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জের (ওসি) গাড়ি চাপায় ঈমাম উদ্দিন (০৭) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার বারবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ঈমাম উদ্দিন উপজেলার বারবাড়ীয়া ইউনিয়নের বাড়া গ্রামের হাবিল মিয়ার ছেলে এবং ঐ বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
নিহতের আপন বড়চাচা মোঃ সেলিম মিয়া বলেন, সকালে আমার ভাতিজা স্কুলে গিয়েছিল, স্কুল ছুটি হলে সে বের হতেই ওসির গাড়ির নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়, সে সময় ওসি সাহেব গাড়িতে ছিল। ঘটনার সাথে সাথে স্থানীয় এলাকাবাসীকে কিছু না বলে তারাহুরো করে ওসির গাড়িতে করে আহত অবস্থায় দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেলে নিয়ে যায়।
ঈমামের মা বকুলী আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘নিজে না খেয়ে ছেলেকে মানুষ করছিলাম। সকালে স্কুলে পাঠিয়েছিলাম, পুলিশ আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই, আর কিছু চাই না।'
বারবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রথম শিফটের ক্লাস শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা বের হয়ে যাচ্ছিল, এমন সময় চিৎকার শুনে রুমের বাহিরে বেরিয়ে দেখি ওসির গাড়ির সামনে এক শিক্ষার্থী পড়ে আছে, সামনেই ওসি দাঁড়িয়ে ছিল, আমি যাওয়ার পর ওসি আমাকে কিছু না বলে তারাহুরো করে ঈমামকে নিয়ে চলে যায়।
বারবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ওসি সাহেব আমার সাথে দেখা করে চলে যাওয়ার পর ঘটনা ঘটেছে, ঘটনার সময় তিনি আমার সাথে ছিলেন না।
অভিযোগ অস্বীকার করে গফরগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, এক্সিডেন্ট তো হতেই পারে, যে যা বলবে সেটা তো সঠিক না। আমি ওসি যা বলবো তাই সঠিক।
ঘটনার সময় আমি বারবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামানের অফিসরুমে ছিলাম, চিৎকার শুনে বাহিরে বেরিয়ে দেখি গাড়ির নিচে এক শিক্ষার্থী পড়ে আছে, সাথে সাথে তাকে নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমকে একাধিকবার মোবাইলফোনে কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।