Hi

ঢাকা, বাংলাদেশ ০১:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিরিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, জনসাধারণের উল্লাস

সিরিয়ার ওপর থেকে দীর্ঘদিনের মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এই ঘোষণা ঘিরে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে দেখা গেছে জনতার উচ্ছ্বাস। রাস্তায় নেমে নাচ-গান, আতশবাজি ও ফাঁকা গুলির মাধ্যমে আনন্দ উদ্‌যাপন করেছেন সাধারণ মানুষ। খবর সিএনএনের।

বুধবার (১৪ মে) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা’র সঙ্গে ট্রাম্পের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে ট্রাম্প বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এই বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে নতুন সম্পর্কের সূচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ফলে সিরিয়ায় ত্রাণ সহায়তা ও বৈদেশিক আর্থিক লেনদেন কার্যত বন্ধ ছিল। এই নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারকে চাপে রাখা। তবে ট্রাম্প জানিয়েছেন, এখন তার নীতি পরিবর্তনের ফলে সিরিয়ার সামনে একটি ‘বিশাল সুযোগ’ তৈরি হয়েছে।

রিয়াদে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘এখন সময় এসেছে সিরিয়ার উঠে দাঁড়াবার। এই সিদ্ধান্ত দেশটিকে স্থিতিশীল ও আত্মনির্ভরশীল করে তুলবে।’ সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল শাইবানি বলেন, এই সিদ্ধান্ত পুনর্গঠনের পথে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

তিনি জানান, বছরের পর বছর যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ কাটিয়ে উঠতে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দেবে।

উল্লেখ্য, সিরিয়ার ৯০ শতাংশ জনগণ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের পর দেশটিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। নতুন সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য আন্তর্জাতিক মহলে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিল।

গত বছর এক সাক্ষাৎকারে আহমেদ আল শারা বলেন, ‘বর্তমানে সিরিয়া কারও জন্য হুমকি নয়। অতীতের শাসকগোষ্ঠী দায়ী ছিল অপরাধের জন্য। নতুন সরকার মানবাধিকার ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

সিরিয়ার নতুন সরকারের অনুরোধে ইসলামপন্থি সংগঠন তাহরির আল শাম (এইচটিএস) কে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে। যদিও জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যের তালিকায় এখনো এইচটিএস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবেই রয়েছে। কারণ সংগঠনটি নিজেকে এক সময় আল কায়েদার অংশ হিসেবে প্রচার করেছিল।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আহমেদ আল শারা বলেন, ‘নতুন সরকার আন্তর্জাতিক আইন মান্য করে চলবে এবং আগের অপরাধের দায় বর্তমান প্রশাসনের নয়।’ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত সিরিয়াকে বৈশ্বিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের পথে এগিয়ে নেবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ই-মেইল সহ সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি সংরক্ষণ করা হবে।

About Author Information

ডিসেম্বরেই নির্বাচন, না হলে সহযোগিতা প্রত্যাহার : বিএনপি

© সর্বস্বত স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © Jonogoner Khobor - জনগণের খবর
                                  কারিগরি সহযোগিতায়ঃ মো. সাইফুল ইসলাম                                  

সিরিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, জনসাধারণের উল্লাস

আপডেট : ০৭:৩৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

সিরিয়ার ওপর থেকে দীর্ঘদিনের মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এই ঘোষণা ঘিরে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে দেখা গেছে জনতার উচ্ছ্বাস। রাস্তায় নেমে নাচ-গান, আতশবাজি ও ফাঁকা গুলির মাধ্যমে আনন্দ উদ্‌যাপন করেছেন সাধারণ মানুষ। খবর সিএনএনের।

বুধবার (১৪ মে) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা’র সঙ্গে ট্রাম্পের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে ট্রাম্প বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এই বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে নতুন সম্পর্কের সূচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ফলে সিরিয়ায় ত্রাণ সহায়তা ও বৈদেশিক আর্থিক লেনদেন কার্যত বন্ধ ছিল। এই নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারকে চাপে রাখা। তবে ট্রাম্প জানিয়েছেন, এখন তার নীতি পরিবর্তনের ফলে সিরিয়ার সামনে একটি ‘বিশাল সুযোগ’ তৈরি হয়েছে।

রিয়াদে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘এখন সময় এসেছে সিরিয়ার উঠে দাঁড়াবার। এই সিদ্ধান্ত দেশটিকে স্থিতিশীল ও আত্মনির্ভরশীল করে তুলবে।’ সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল শাইবানি বলেন, এই সিদ্ধান্ত পুনর্গঠনের পথে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

তিনি জানান, বছরের পর বছর যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ কাটিয়ে উঠতে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দেবে।

উল্লেখ্য, সিরিয়ার ৯০ শতাংশ জনগণ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের পর দেশটিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। নতুন সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য আন্তর্জাতিক মহলে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিল।

গত বছর এক সাক্ষাৎকারে আহমেদ আল শারা বলেন, ‘বর্তমানে সিরিয়া কারও জন্য হুমকি নয়। অতীতের শাসকগোষ্ঠী দায়ী ছিল অপরাধের জন্য। নতুন সরকার মানবাধিকার ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

সিরিয়ার নতুন সরকারের অনুরোধে ইসলামপন্থি সংগঠন তাহরির আল শাম (এইচটিএস) কে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে। যদিও জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যের তালিকায় এখনো এইচটিএস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবেই রয়েছে। কারণ সংগঠনটি নিজেকে এক সময় আল কায়েদার অংশ হিসেবে প্রচার করেছিল।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আহমেদ আল শারা বলেন, ‘নতুন সরকার আন্তর্জাতিক আইন মান্য করে চলবে এবং আগের অপরাধের দায় বর্তমান প্রশাসনের নয়।’ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত সিরিয়াকে বৈশ্বিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের পথে এগিয়ে নেবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।