Hi

ঢাকা, বাংলাদেশ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত

রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশীতে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জসিম উদ্দিন ব্যাপারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।এই ঘটনায় বিচারের দাবিতে নিহতের পরিবারের পক্ষে কয়েকশ এলাকাবাসী রায়পুর খাসের হাট বাজারে আজ(১৯ এপ্রিল) শনিবার সকাল ১১ টায় মানববন্ধন করেন, ঘন্টাখানেক মানববন্ধন করার পর এক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন,এতে অংশগ্রহণ কারীগণ নিহতের ঘটনায় সুস্থ তদন্ত করে, আসামিদের ফাঁসি দাবী করেন।

এর আগে সংঘর্ষের ঘটনায় স্পেনপ্রবাসী সাইজ উদ্দিন নামে একজন নিহত হয়।হত্যার ঘটনায় উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ফারুক কবিরাজকে প্রধান আসামি করে তার ভাই মেহেদী কবিরাজসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ১৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানা গেছে ।

অপরদিকে, সংঘর্ষের পর প্রতিপক্ষের তিনটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, অন্তত ১৫টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠলেও এ বিষয়ে কোনো মামলা হয়নি। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। তারা অভিযোগ করছেন, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীদের আড়াল করে একটি প্রভাবশালী মহল ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে।

এদিকে, সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলা বিএনপি ১৫ নেতাকর্মীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে কৃষকদলের সদস্য সচিব জিএম শামীমকে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। ৯ এপ্রিল রাতে রায়পুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম মিঠু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সালেহ আহম্মদ ও সদস্য সচিব সফিকুর রহমান ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম মিঠু জানান, উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষকদল ও তাঁতীদলের যৌথ সভায় আজীবন বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্তও হয়।

বহিষ্কৃতরা হলেন—মেহেদী কবিরাজ (৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি), এবাদ উল্যা গাজী (৭ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি), ফারুক কবিরাজ (ইউনিয়ন বিএনপি নেতা), সফিক রাড়ী (৮ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক), আরিফ (৮ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি), ফারুক গাজী ও রায়হান (৭ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল), আল-আমিন কবিরাজ (৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল), মানিক আহমেদ তারেক (ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল আহ্বায়ক), ওমর আলী হাওলাদার (সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক), নজরুল ইসলাম (৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল), শরিফ বাগ, শাহজাহান মাঝি (ইউনিয়ন যুবদল) এবং শাহ আলী (ইউনিয়ন কৃষকদল সদস্য সচিব)।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বহিষ্কৃতদের সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের কোনো প্রকার যোগাযোগ বা সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অমান্যকারীদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল বিকেলে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির ফারুক কবিরাজ ও কৃষকদল নেতা জিএম শামীম গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে স্পেনপ্রবাসী বিএনপি কর্মী সাইজ উদ্দিন কুপিয়ে হত্যা করা হয় এবং জসিম উদ্দিন ব্যাপারী চিকিৎসাধীন মারা যায়।

সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। নিহত সাইজ উদ্দিন ছিলেন কৃষকদল নেতা শামীমের অনুসারী আর জসীমউদ্দিন ফারুক কবিরাজের অনুসারী
সংঘর্ষের ঘটনায় ঐ রাতে তিনটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং আরও অন্তত ১৫টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ই-মেইল সহ সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি সংরক্ষণ করা হবে।

About Author Information

© সর্বস্বত স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © Jonogoner Khobor - জনগণের খবর
                                  কারিগরি সহযোগিতায়ঃ মো. সাইফুল ইসলাম                                  

দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত

আপডেট : ০৩:২৭:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশীতে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জসিম উদ্দিন ব্যাপারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।এই ঘটনায় বিচারের দাবিতে নিহতের পরিবারের পক্ষে কয়েকশ এলাকাবাসী রায়পুর খাসের হাট বাজারে আজ(১৯ এপ্রিল) শনিবার সকাল ১১ টায় মানববন্ধন করেন, ঘন্টাখানেক মানববন্ধন করার পর এক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন,এতে অংশগ্রহণ কারীগণ নিহতের ঘটনায় সুস্থ তদন্ত করে, আসামিদের ফাঁসি দাবী করেন।

এর আগে সংঘর্ষের ঘটনায় স্পেনপ্রবাসী সাইজ উদ্দিন নামে একজন নিহত হয়।হত্যার ঘটনায় উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ফারুক কবিরাজকে প্রধান আসামি করে তার ভাই মেহেদী কবিরাজসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ১৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানা গেছে ।

অপরদিকে, সংঘর্ষের পর প্রতিপক্ষের তিনটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, অন্তত ১৫টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠলেও এ বিষয়ে কোনো মামলা হয়নি। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। তারা অভিযোগ করছেন, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীদের আড়াল করে একটি প্রভাবশালী মহল ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে।

এদিকে, সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলা বিএনপি ১৫ নেতাকর্মীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে কৃষকদলের সদস্য সচিব জিএম শামীমকে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। ৯ এপ্রিল রাতে রায়পুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম মিঠু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সালেহ আহম্মদ ও সদস্য সচিব সফিকুর রহমান ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম মিঠু জানান, উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষকদল ও তাঁতীদলের যৌথ সভায় আজীবন বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্তও হয়।

বহিষ্কৃতরা হলেন—মেহেদী কবিরাজ (৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি), এবাদ উল্যা গাজী (৭ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি), ফারুক কবিরাজ (ইউনিয়ন বিএনপি নেতা), সফিক রাড়ী (৮ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক), আরিফ (৮ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি), ফারুক গাজী ও রায়হান (৭ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল), আল-আমিন কবিরাজ (৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল), মানিক আহমেদ তারেক (ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল আহ্বায়ক), ওমর আলী হাওলাদার (সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক), নজরুল ইসলাম (৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল), শরিফ বাগ, শাহজাহান মাঝি (ইউনিয়ন যুবদল) এবং শাহ আলী (ইউনিয়ন কৃষকদল সদস্য সচিব)।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বহিষ্কৃতদের সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের কোনো প্রকার যোগাযোগ বা সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অমান্যকারীদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল বিকেলে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির ফারুক কবিরাজ ও কৃষকদল নেতা জিএম শামীম গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে স্পেনপ্রবাসী বিএনপি কর্মী সাইজ উদ্দিন কুপিয়ে হত্যা করা হয় এবং জসিম উদ্দিন ব্যাপারী চিকিৎসাধীন মারা যায়।

সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। নিহত সাইজ উদ্দিন ছিলেন কৃষকদল নেতা শামীমের অনুসারী আর জসীমউদ্দিন ফারুক কবিরাজের অনুসারী
সংঘর্ষের ঘটনায় ঐ রাতে তিনটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং আরও অন্তত ১৫টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।