Hi

ঢাকা, বাংলাদেশ ১২:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পুলিশ ছেড়ে দেয় মানবিক কারণে

বাস সংকটে ঝুঁকি নিয়ে পিকআপে যাচ্ছে যাত্রি

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ছুটি ঘোষণা করেছে শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ পোশাক কারখানা। ছুটির পরপরই ঈদের আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করার জন্য ঝুঁকি নিয়ে পিকআপে রওনা হয়েছে নাড়ীর টানে ঘরে ফেরা মানুষ। এমন যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানবিক কারনে রাস্তায় পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয় বলে দাবি পিকআপ চালকদের।

বুধবার (৪ জুন) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল বাস স্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশেই পিকআপে সাড়ি করে রেখে যাত্রী তুলছেন চালকরা। কম ভাড়ায় মনোযোগী হয়ে ঝুঁকি উপেক্ষা করে বিনা দ্বিধায় পিকআপে উঠছেন যাত্রীরা।

পিকআপে করে বগুড়া যাবেন পোশাক শ্রমিক ফারজানা বলেন , বাসস্ট্যান্ডে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু বাস পাওয়া যাচ্ছিল না। দুই একটি বাস পাওয়া গেলেও তাতে কোন ধরনের সিট পাওয়া যায়নি। যে কারণে বাধ্য হয়ে পিকআপে যাত্রা করেছি। ঝুঁকির ব্যাপারে তিনি বলেন, ঝুকি তো আছেই, কিন্তু বাড়িতেও তো যেতে হবে। আমরা তো বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতে না পারলে ঈদের আনন্দই যেন ঈদ বৃথা।

পিকআপ চালক দুলাল হোসেন বলেন, আমরা বাইপাইলে যাত্রী তুলে সিরাজগঞ্জ, সর্বোচ্চ বগুড়া পর্যন্ত যাই। জনপ্রতি মাত্র ৫০০/৬০০ টাকা নেই। বাসে যেতে হলে তাদের ডাবল ভাড়া গুণতে হবে। তাই বুঝেশুনে যাত্রীরা আমাদের পিকআপে যায়। আমরা যাত্রীদের কম টাকায় যাত্রীসেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা না থাকলে এই লোকগুলো কিভাবে বাড়ি যাবে প্রশ্ন করেন তিনি।

অপর যাত্রী ঈসমাইল বলেন, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ, যাতায়াত করতেই যদি হাজার টাকা গুনতে হয় তাহলে ছেলেমেয়েদের জামাকাপড় কিনে দিবো কি দিয়ে। তাই যতটা সম্ভব টাকা বাঁচিয়ে বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছি। বর্ষার দিন হলেও আমরা কিন্তু পিকআপে যেতেই বাধ্য হচ্ছি। আমরা জানি এতে ভোগান্তি ও ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু কি করব দুই টাকা বাঁচলে পরিবারকে একটু ভালো কিছু খাওয়াতে পারব।

অপর পিকআপ চালক সুজন বলেন, আমরা জোর করে যাত্রীদের পিকআপে তুলছি না। ঝুঁকি জেনেও অনেকেই পিকআপে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপারে তিনি বলেন, অনেকসময় পুলিশ পিকআপ থামায় কিন্তু মানবিক কারনে পরে তারা ছেড়ে দেয়। সড়কে কোন ধরনের সমস্যা হয় না। সমস্যা হলে তো যাত্রীরা পিকআপে যেতো না।

এব্যাপারে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহমেদ বলেন, যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয় সেদিকে আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি। তবে পিকআপে যাত্রী পরিবহনের বিষয়টি যদি আমাদের চোখে পড়ে অবশ্যই আমারা ব্যবস্থা নেবো।

ট্যাগ :

মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ই-মেইল সহ সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি সংরক্ষণ করা হবে।

About Author Information

© সর্বস্বত স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © Jonogoner Khobor - জনগণের খবর
                                  কারিগরি সহযোগিতায়ঃ মো. সাইফুল ইসলাম                                  

পুলিশ ছেড়ে দেয় মানবিক কারণে

বাস সংকটে ঝুঁকি নিয়ে পিকআপে যাচ্ছে যাত্রি

আপডেট : ১১:৪৮:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ছুটি ঘোষণা করেছে শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ পোশাক কারখানা। ছুটির পরপরই ঈদের আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করার জন্য ঝুঁকি নিয়ে পিকআপে রওনা হয়েছে নাড়ীর টানে ঘরে ফেরা মানুষ। এমন যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানবিক কারনে রাস্তায় পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয় বলে দাবি পিকআপ চালকদের।

বুধবার (৪ জুন) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল বাস স্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশেই পিকআপে সাড়ি করে রেখে যাত্রী তুলছেন চালকরা। কম ভাড়ায় মনোযোগী হয়ে ঝুঁকি উপেক্ষা করে বিনা দ্বিধায় পিকআপে উঠছেন যাত্রীরা।

পিকআপে করে বগুড়া যাবেন পোশাক শ্রমিক ফারজানা বলেন , বাসস্ট্যান্ডে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু বাস পাওয়া যাচ্ছিল না। দুই একটি বাস পাওয়া গেলেও তাতে কোন ধরনের সিট পাওয়া যায়নি। যে কারণে বাধ্য হয়ে পিকআপে যাত্রা করেছি। ঝুঁকির ব্যাপারে তিনি বলেন, ঝুকি তো আছেই, কিন্তু বাড়িতেও তো যেতে হবে। আমরা তো বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতে না পারলে ঈদের আনন্দই যেন ঈদ বৃথা।

পিকআপ চালক দুলাল হোসেন বলেন, আমরা বাইপাইলে যাত্রী তুলে সিরাজগঞ্জ, সর্বোচ্চ বগুড়া পর্যন্ত যাই। জনপ্রতি মাত্র ৫০০/৬০০ টাকা নেই। বাসে যেতে হলে তাদের ডাবল ভাড়া গুণতে হবে। তাই বুঝেশুনে যাত্রীরা আমাদের পিকআপে যায়। আমরা যাত্রীদের কম টাকায় যাত্রীসেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা না থাকলে এই লোকগুলো কিভাবে বাড়ি যাবে প্রশ্ন করেন তিনি।

অপর যাত্রী ঈসমাইল বলেন, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ, যাতায়াত করতেই যদি হাজার টাকা গুনতে হয় তাহলে ছেলেমেয়েদের জামাকাপড় কিনে দিবো কি দিয়ে। তাই যতটা সম্ভব টাকা বাঁচিয়ে বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছি। বর্ষার দিন হলেও আমরা কিন্তু পিকআপে যেতেই বাধ্য হচ্ছি। আমরা জানি এতে ভোগান্তি ও ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু কি করব দুই টাকা বাঁচলে পরিবারকে একটু ভালো কিছু খাওয়াতে পারব।

অপর পিকআপ চালক সুজন বলেন, আমরা জোর করে যাত্রীদের পিকআপে তুলছি না। ঝুঁকি জেনেও অনেকেই পিকআপে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপারে তিনি বলেন, অনেকসময় পুলিশ পিকআপ থামায় কিন্তু মানবিক কারনে পরে তারা ছেড়ে দেয়। সড়কে কোন ধরনের সমস্যা হয় না। সমস্যা হলে তো যাত্রীরা পিকআপে যেতো না।

এব্যাপারে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহমেদ বলেন, যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয় সেদিকে আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি। তবে পিকআপে যাত্রী পরিবহনের বিষয়টি যদি আমাদের চোখে পড়ে অবশ্যই আমারা ব্যবস্থা নেবো।